শনিবার, মার্চ ৬, ২০২১




ব্যাংক কোম্পানির বেনামি ঋণের দায়ও গ্রাহকের

নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন:

ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধিত খসড়া: মূল ঋণ মওকুফ করা যাবে না, সুদ মওকুফে থাকবে বিধিনিষেধ * তিন মাসের বেশি মেয়াদে বিকল্প পরিচালক নয়, খেলাপির নোটিশ পেলে পরিচালকরা পদত্যাগ করতে পারবেন না, তাদের পরিবারের সংজ্ঞায় শিথিলতা।গ্রাহকের নিজ নামে বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঋণের পাশাপাশি বেনামি বা ভুয়া কিংবা অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে জালজালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ নিলে তার দায়ও বহন করতে হবে।আর কোনোক্রমেই মূল ঋণ বা আসল মওকুফ করা যাবে না। ইচ্ছামতো করা যাবে না সুদ মওকুফও। এক্ষেত্রে থাকবে বিধিনিষেধ। শুধু তাই নয়, তিন মাসের বেশি মেয়াদে নিয়োগ করা যাবে না বিকল্প পরিচালক।তবে পরিচালকদের পরিবারের সংজ্ঞায় আনা হচ্ছে শিথিলতা। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স ছাড়া কেউ ‘ব্যাংক’ শব্দ ব্যবহার করতে পারবে না। ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে এসব বিধান যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধিত খসড়া থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।খসড়াটি বর্তমানে অর্থ, আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটির কাছে রয়েছে। কমিটি এটি চূড়ান্ত করলে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। আইনের খসড়ায় ঋণখেলাপির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, নিজের বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের দায় গ্রাহককে বহন করতেই হবে।এর বাইরে বেনামে বা অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা বা এর অংশ বা এর সুদ বা মুনাফা গ্রাহকের সামর্থ্য থাকার পরও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী পরিশোধ না করলে তিনি ঋণখেলাপি বলে গণ্য হবেন। এতে আরও বলা হয়, ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত ব্যাংকের লিখিত অনুমতি ছাড়া হস্তান্তর বা স্থানান্তর করা যাবে না। এরপরও জামানত ব্যাংকের অজান্তে হস্তান্তর করলে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী ঋণ পরিশোধ না করলে তিনি খেলাপি বলে গণ্য হবেন। সূত্র জানায়, প্রচলিত আইনে গ্রাহক নিজ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণের দায় গ্রাহককে বহন করতে হয়। বেনামি বা ভুয়া ঋণের দায় বহন করতে হয় না।তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে যদি কোনো গ্রাহকের বেনামি বা ভুয়া ঋণ উদঘাটিত হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক যদি সন্দেহাতীতভাবে মনে করে ওই ঋণ গ্রাহকেরই।এর দায় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের নামে দেখানোর জন্য ব্যাংককে নির্দেশ দেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই ভুয়া বা বেনামি ঋণের দায় গ্রাহককে বহন করতে হয়। এসব ঋণ খেলাপি হলে তখন গ্রাহকও খেলাপি হন। সংশোধিত আইনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ছাড়াই শুধু ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তদন্তে শনাক্ত হলেই এর দায় সরাসরি গ্রাহকের ওপর পড়বে।একই সঙ্গে জালজালিয়াতি করে ভুয়া বা বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নেওয়ার দায়ে গ্রাহককে আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে। এই ঋণ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যাংক ও জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও দায়ী হতে হবে এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইনে কঠোর বিধান রাখা হলেও পরে সার্কুলার জারির মাধ্যমে শিথিলতা আনা হয়। এটি ঠিক নয়। যে কারণে আইনের সঠিক প্রয়োগ আর থাকে না।

Spread the love
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − three =

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর